আকাশের অসীম নীল—
যেখানে ডানা মেলে মানুষ
ভাবত সে চিরন্তন,
ভাবত, মেঘের রাজ্যে
তারই রাজত্ব, তারই গন্তব্য।
কিন্তু এক ফোঁটা ধাতব ত্রুটি,
এক চিলতে আগুনের রেখা,
এক ঝাপটা অদৃশ্য বাতাস—
সেই রাজ্য ভেঙে দেয় মুহূর্তেই।
তখন আর কেউ পাসপোর্ট দেখে না,
টিকিটের শ্রেণি গুনে না,
ধর্মের নাম উচ্চারণ করে না ঘৃণায়—
সব মুখে কেবল এক আর্তি—
“আমাকে বাঁচতে দাও।”
শিশুর কান্না, বৃদ্ধের শ্বাস,
প্রেমিক-প্রেমিকার চোখের শেষ চাওয়া—
সব মিলেমিশে যায়
এক অপরিচিত সিম্ফনিতে,
যেখানে কোরআনের আয়াত,
বেদের মন্ত্র, গীতা ও বাইবেলের বাক্য
একই ছন্দে উচ্চারিত হয়।
ডানার ভেতরে তখন
মানবসভ্যতার ক্ষুদ্র প্রতিরূপ—
হাজার বছর ধরে বাঁধা বিভাজন
মুহূর্তে মুছে যায়
একই মৃত্যুর সম্ভাবনায়।
পৃথিবী তখন দূরে,
শুধু অগ্নি আর মেঘের মাঝখানে
মানুষ প্রথম বুঝতে শেখে—
সে কোনো জাতি নয়, কোনো ধর্ম নয়,
সে কেবল এক ক্ষণস্থায়ী আলো
যে আলো নিভে গেলেই
অন্ধকারে সবাই সমান।
পতনের আগে এক যাত্রী
অপরিচিতের হাত শক্ত করে ধরে—
সে জানে, এই স্পর্শই
শেষ প্রার্থনা, শেষ ঐক্য,
যা হয়তো কোনোদিন
সভ্যতার ইতিহাসে লেখা হবে না,
কিন্তু আকাশের নীল চামড়ায়
চিরকাল থেকে যাবে।
আকাশ ভেঙে পড়ে,
মানুষ ছড়িয়ে যায় ধোঁয়া ও জলের ওপারে—
তবু যে হাত বেঁচে থাকে,
সে হাত আবার অন্য হাত খোঁজে,
টেনে তোলে, বাঁচায়,
আর প্রমাণ করে—
যে আকাশের অন্তিম প্রার্থনাতেও
মানুষ মানুষেরই পাশে দাঁড়ায়।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
কবিতা “আকাশের অন্তিম প্রার্থনা” মূলত প্লেন ক্র্যাশ বিষয়ের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এখানে বিমানের দুর্ঘটনা কেবল একটি ঘটনার বিবরণ নয়, বরং মানবসভ্যতার ভঙ্গুরতা, মৃত্যুভয়ের মুহূর্তে মানুষের সার্বজনীন ঐক্য, ধর্ম-বর্ণ-জাতিগত ভেদাভেদের বিলুপ্তি এবং মানবিকতার চূড়ান্ত প্রকাশকে প্রতীকীভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আকাশে পতনের আগে যাত্রীদের শেষ অনুভূতি, অচেনা মানুষের হাত ধরা, এবং মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সকলের একসাথে প্রার্থনার দৃশ্য—সবই বিষয়টিকে গভীরভাবে ধারণ করেছে। প্লেন ক্র্যাশকে এখানে কেবল শারীরিক বিপর্যয় নয়, বরং মানবজাতির অস্তিত্ব ও সহমর্মিতার এক উচ্চতর সত্যে রূপান্তর করা হয়েছে, যা বিষয়ের সঙ্গে গভীর সামঞ্জস্য বজায় রাখে এবং পাঠকের মনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে।
২৫ জুলাই - ২০২৫
গল্প/কবিতা:
৪ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর,২০২৫